স্বদেশ ডেস্ক:
৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে ডেমোক্র্যাটরা। গতকাল সোমবার এই প্রক্রিয়া চালু করতে কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে দুটো প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে ক্যাপিটল হিল ভবনে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় আক্রমণাত্মক আগ্রাসনে ভূমিকা রাখার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করা হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহের উস্কানি’ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে প্রস্তাবগুলোতে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ডেমোক্র্যাটরা বলেছেন গত বুধবারের ঘটনা বিবেচনায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে অনুরোধ করা হয়েছে তার সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে ট্রাম্পকে তার পদ থেকে সরিয়ে দিতে। আর পেন্স যদি এই পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হন সেক্ষেত্রে ট্রাম্পকে সরানোর জন্য উত্থাপন করা হয়েছে অভিশংসন প্রস্তাব।
ডেমোক্র্যাটিক হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট আমাদের সংবিধান, আমাদের দেশ এবং আমেরিকান জনগণের জন্য একটি আসন্ন হুমকির প্রতিনিধিত্ব করছেন। তাকে যত দ্রুত সম্ভব তার পদ থেকে অপসারণ করতে হবে।’
গত বুধবার ক্যাপিটলে হামলার ঘটনায় ৫ জনের নিহত হওয়ার পর থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পদত্যাগ, পদ থেকে অপসারণ বা অভিশংসনের ডাক দেয় ডেমোক্র্যাটরা। রিপাবলিকানদের অনেকেই এ মতের পক্ষে আসছেন।
বিবিসির খবরে আরও বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন নভেম্বরের নির্বাচনে তার ‘ভোট চুরি’ হয়েছে। তার এই দাবি ক্যাপিটলে দাঙ্গা-হাঙ্গামার ইন্ধন জুগিয়েছে। ইমপিচ রেজুলেশনে ট্রাম্পের বিপক্ষে এ অভিযোগ করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউস থেকে অভিশংসনের এ হুমকিকে ‘রাজনৈতিকভাবে অনুপ্রাণিত’ মন্তব্য করে প্রত্যাখ্যান করেছে। এদিকে শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট ব্লক করার পর তিনি আর কোনো প্রকাশ্য বিবৃতি দেননি।
আগামী ২০ জানুয়ারি ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন। এদিন পদত্যাগ করবেন ট্রাম্প। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প বলেছেন; তিনি বাইডেনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন না।
সামগ্রিক ঘটনা নিয়ে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের সদস্যরা (চেম্বার অব রিপ্রেজেনটেটিভস হাউস ডেমোক্র্যাট) দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন শুরু করেছেন। এর আগে ২০১৯ সালেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং কংগ্রেসের বাধার অভিযোগে আনা হয়েছিল। তবে সিনেট তাকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতেিএ দুটি অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছিল।
এখন পর্যন্ত কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এর আগে দুবার অভিশংসিত করা হয়নি। এদিকে ট্রাম্পকে অভিশংসনের ডাক দিলেও সিনেটে বিস্তৃত রিপাবলিকান সমর্থনের কারণে তার এ সাজা কম হতে পারে।